সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

ইনসুলিনেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না খালেদা জিয়ার

ইনসুলিনেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না খালেদা জিয়ার

স্বদেশ ডেস্ক:

সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার টং আলসার, গত এক সপ্তাহে চার কেজি ওজন কমে যাওয়া এবং ব্লাড সুগার ২০-এর নিচে না নামাসহ শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। এ অবস্থায় মুক্তি দিয়ে অবিলম্বে তার পছন্দ অনুযায়ী দেশে অথবা বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে দলটি।

গতকাল শুক্রবার বিকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের কাছে এ দাবি জানান। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জিবে আলসার হয়েছে। গত এক সপ্তাহে তার ওজন ৪ কেজি কমেছে। ইট ইজ ভেরি এলার্মিং। আপনারা (সাংবাদিকরা) ম্যাডামকে দেখলে এখন চিনতেই পারবেন না। তিনি শুকিয়ে এ রকম হয়ে গেছেন। তিনি খেতে পারছেন না, কিছুই খেতে পারছেন না।

সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। তার পছন্দ অনুযায়ী দেশে অথবা বিদেশে যেখানে তিনি চিকিৎসা করাতে চান সেখানে তার চিকিৎসা করার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। গত ১ এপ্রিল থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি রয়েছেন তিনি।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হুইলচেয়ার ছাড়া মুভই করতে পারছেন না। প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ। দুজনের সাহায্য নিয়ে বিছানা থেকে উঠাতে হয় এবং হুইলচেয়ারে বসিয়ে ওয়াশরুমে বা খাবার টেবিলে নিতে হয়। এটা অমানবিক; কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন, দুইবার বিরোধী দলের নেতা ছিলেন, তার স্বামী স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তার দুই সন্তানসহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। তার মতো নেতার সঙ্গে চরম অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে।

প্রথম শ্রেণির প্রাপ্ত কয়েদির সঙ্গে যে আচরণ করা হয় তার চেয়েও খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। দেশনেত্রীর যে খাওয়া সেগুলো তাকে ঠিকভাবে দেওয়া হয় না। তার যেসব ফল-মূল যেগুলো খাওয়া উচিত সেগুলো তিনি ঠিকমতো পান না। সবচেয়ে বড় হচ্ছে তার চিকিৎসা-এটা কোনো মতেই এখানে (বিএসএমএমইউ) সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশনেত্রীর দাঁত (সার্প) চোখা হয়ে যাওয়ায় জিবে আঘাত করলেই তিনি কষ্ট পান।

এ কারণে খেতেও পারছেন না। চিকিৎসকরা টুথ ব্রান্ডিং করেছিলেন, দাঁতের সার্পনেসটা কমিয়ে এনেছিলেন। এখন আরও বেশি করে দেখা দিয়েছে। তার রুট ক্যানেল, স্কেলিং, টুথ এসট্রাকংশ করা দরকার। বয়সের কারণে দুই-একটা দাঁত তার নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো তুলে ফেলা দরকার।

খালেদা জিয়ার ‘ব্লাড সুগার’ ইনসুলিন নেওয়ার পরও নামছে না বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি ডায়াবেটিসের তিনটা ওষুধ খাচ্ছেন। তারপরও কিছুতেই তা ২০-এর নিচে নামছে না। এটা অত্যন্ত এলার্মিং। আর্থ্রাইটিস, ফ্রোজেন সোল্ডার প্রভৃতি রোগে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটেছে বলে জানান তিনি।

ফখরুল বলেন, ম্যাডামের ব্যাপারটা দলের সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, পরিবারকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করেছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ আচরণের উদ্দেশ্যটা কী? রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কী তাকে একেবারে জীবন অবসানের চেষ্টা করা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। আমরা শিগগিরই তার মুক্তি চাই, এ মুক্তিটা তার প্রাপ্য। আজকে সরকার তার জামিনে প্রত্যেকটা বাধার সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সরকার এ বাধাটা সৃষ্টি করছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877